সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গত কয়েকদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। একটি টেলিভিশন প্রতিবেদনে উঠে আসা মা-বাবাক...
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গত কয়েকদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। একটি টেলিভিশন প্রতিবেদনে উঠে আসা মা-বাবাকে অবহেলার অভিযোগ, অন্যদিকে ছড়িয়ে পড়া এক আবেগঘন ভিডিও—এই দুই বিপরীত চিত্র যেন মুহূর্তেই বদলে দিল বিতর্কের মোড়। এবার রিপন মিয়াকে নিয়ে মুখ খুললেন জনপ্রিয় মূকাভিনেতা মীর লোকমান।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) পোস্ট করা মীর লোকমানের ফেসবুক স্ট্যাটাসটি আরটিভি নিউজের পাঠকদের জন্য হুবহু তুরে ধরা হলো।
‘রিপন মিয়ারে নিয়া কিছু কথা…
গত কয়েক দিন ধরে তারে নিয়ে মিডিয়ায় খুব হাইপ। প্রায় সবগুলো জাতীয় ও মূল ধারার সংবাদ মাধ্যম তাকে নিয়ে নিউজ করেছে। তার একেকটি বাক্য যেন রীতিমতো মনীষীদের বাণী চিরন্তনীর মতো প্রকাশ করছে। প্রথম আলোতে তার নিউজ দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুমিত আল রশিদ স্যার আমাকে কল দিয়ে বলেন- মীর লোকমান, গেছে, সব গেছে। এর মতো লোকরে নিয়ে শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ মিডিয়ারও এমন বিরাট আয়োজন!
আসল কথায় আসি। সত্যি বলতে এর মতো ইতর খুব কমই দেখেছি আমি। ২০২০ সালের দিকে করোনার সময়ে রিপন মিয়া আসলে ওরকম গণনাযোগ্য কেউ ছিল না। তখন সে রিপন ভিডিও হিসেবে পরিচিত। ফেসবুকে তার সরল মনের ছন্দ মিলিয়ে কথা বলা দেখে যোগাযোগ করে ঢাকায় নিয়ে আসি। আমার বাসাতেই ওঠে। ওর আসা যাওয়া সহ যাবতীয় খরচও আমি দিই। আমার মূকাভিনয়ের ক্লাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে তাকে ক্লাস করার সুযোগ দেয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল, অনলাইনে তার হঠাৎ করে পরিচিতি পেয়ে যাওয়াটা যেন ইতিবাচকভাবে মূলধারার লোকজন কাজে লাগায়। এবং পড়াশোনা না জানা ছেলেটা যেন সত্যিকার অর্থেই বুঝজ্ঞান সম্পন্ন হয়, শহুরে সমাজের মিডিয়ার কাজের ধারার সাথে সে যেন মিশতে পারে, যেহেতু সে তা চায়।
হাতিরপুলে আমার ফ্লোরে সে ক্লাসে অংশ নেয় দুইদিন। তিন নাম্বার দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আসে। ক্লাসের বাকি শিক্ষার্থীরা সহ সবাই মিলে যার যার ক্যাপাসিটিকে কাজে লাগিয়ে গ্রুপ ভিডিও শ্যুট হচ্ছিল। বাকি ছেলে মেয়েরা তাকে ক্যাম্পাস ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিল।
কয়েকদিন ক্লাস করে সে তার বাড়ি চলে যায়। এরপর থেকে তার জঘন্য কার্যকলাপ শুরু হয়। একসাথে থাকা আমাদের মেয়েদের ছবি ব্যবহার করে সে ফেসবুকে লিখতে থাকে- আমার গার্লফ্রেন্ড, আমি এম রোকেয়া হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা আমার পিছে পিছে ঘুরে কিন্তু আমি পাত্তা দিই না। তার এই কার্যকলাপ দেখে একজন মেয়ে রীতিমতো অসুস্থ হয়ে পড়ে।
আমি তাকে কল দিয়ে অনেকবার অনুরোধ করি যে, এসব ছবি ও লেখা ডিলিট করে দেন। আমি আপনাকে একটু হলেও শিখিয়েছি, মানে আপনার শিক্ষক। এরপর থেকে সে আমার ফোন আর রিসিভ করেনি। উল্টা আরো বাজে বাজে পোস্ট দিয়ে গেছে একজন মেয়ের ছবি ব্যবহার করে।
আমি বাধ্য হয়ে মুমিত স্যার সহযোগিতা নিই। উনি আমাকে খুব বকাঝকা করেন, না বুঝে কেন তারে আনলাম। এরপর প্রথম আলোর নেত্রকোনা প্রতিনিধির সহযোগিতায় থানায় ডেকে নেয়া হয় তাকে। পুলিশ তাকে বাধ্য করে সব পোস্ট ডিলিট করতে, একই সাথে আমাদের মেয়েদের সব ছবি তার মোবাইল থেকে ডিলিট করা হয়। তাকে সারাদিন থানায় আটকে রেখে সম্ভবত মুচলেকা নিয়ে সন্ধ্যায় ছাড়া হয়। এক সপ্তাহ পর তার মোবাইল থানা থেকে ফেরত দেয়া হয়।
গত দুই দিন ধরে তারে নিয়ে দেখছি আবার বিপরীত কিছু লেখা হচ্ছে, সেটাও মিডিয়াতেই। সে নাকি বাবা মাকে দেখে না, বউ সন্তানকে অস্বীকার করে। আরো কত কী!
রিপন মিয়ার কল্যাণ কামনা করি, তার সুস্থ ও স্বাস্থ্য সম্মত স্বাভাবিক জীবন হোক।